
লোকনৃত্যে জাতীয় পর্যায়ে চা শ্রমিক সন্তানের প্রথম স্থান অর্জন

সিলেটের জমিন ডেস্ক রিপোর্ট
২০২৩-০৯-১৩ ০৬:৫৫:২৬ / Print

কেন্দ্রীয় বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা আয়োজিত জাতীয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে লোকনৃত্যে ‘খ’ বিভাগে সারাদেশের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেছে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের চা শ্রমিক সন্তান অর্পিতা তাঁতী অনন্যা।
অর্পিতা উপজেলার কালীঘাট চা বাগানের বাসিন্দা চা শ্রমিক অজয় তাঁতীর কনিষ্ঠ মেয়ে এবং বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে নাচে হাতেখড়ি হয় অর্পিতার। শুরু থেকে নৃত্যশালায় সে নৃত্য শিখে এই সাফল্য অর্জন করেছে। তার বড় বোন সঙ্গীতের সাথে জড়িত, সে গানের শিক্ষার্থী।
নৃত্যশালার নৃত্য শিক্ষক অনিন্দ্রিতা দাশ গুপ্তা প্রীমা জাতীয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য দক্ষ করে গড়ে তোলেন অর্পিতাকে। নিজের চেষ্টা-সাধনা, বড় বোন ও বাবা-মায়ের অনুপ্রেরণা এবং নৃত্যশালার শিক্ষকের সহযোগিতায় জাতীয় পর্যায়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে লোকনৃত্যে ‘খ’ বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করে।
অর্পিতা তাঁতী অনন্যা এর আগে দেশব্যাপী বয়স বিষয় ভিত্তিক জাতীয় নৃত্য প্রতিযোগিতায় লোকনৃত্য ‘খ’ বিভাগে সেরা শিল্পীর পুরস্কার লাভ এবং জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ জেলা পর্যায়ে লোকনৃত্য প্রতিযোগীতায় (ক-গ্রুপে) সেরা বিজয়ী হয়। আগামী ৩০শে সেপ্টেম্বর টুঙ্গিপাড়ায় বিজয়ীদের হাতে শিশু কিশোর পদক তুলে দেওয়া হবে।
অর্পিতার বড় বোন অন্তরা তাঁতী বলেন, ‘আমরা খুব খুশি, আমার বোন বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা আয়োজিত ৬৪ জেলার মধ্যে লোকনৃত্যে খ বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। অর্পিতা এতো দূরে যাবে তা আমরা ভাবতে পারিনি। আমরা চা বাগানের বাসিন্দা, কিন্তু চা বাগান থেকে গিয়ে সে যে প্রথম হয়েছে সে অনুভূতিটা কখনো প্রকাশ করার মতো না। আমি গান করি আর সে নাচ করে। ছোট বেলা থেকে বাবা ও মা আমাদের জন্য অনেক কষ্ট করেছেন।’
অর্পিতার মা অলি তাঁতী বলেন,‘ছোট থেকে আমাদের স্বপ্ন ছিল অর্পিতা যেনো ভালো নৃত্য শিল্পী হয়। এতো ছোট থাকতেই সে যে, এতো বড় অর্জন আমাদেরকে এনে দেবে তা কল্পনার বাহিরে। অর্পিতাকে যখন ঢাকাতে নিয়ে গেলাম ৬৪ জেলা থেকে প্রথম স্থান অর্জনে নাম যখন বললো তখন আমার চোখে জল ধরে রাখতে পারিনি। হয়তো ঈশ্বরই আমাদের আশাটা পূরণ করেছেন।’
নৃত্যশালার শিক্ষক অনিন্দ্রিতা দাশ গুপ্তা প্রীমা বলেন, ‘অর্পিতা আমার নাচের স্কুলে এসেছে প্রায় ৬-৭ বছর হয়েছে। ছোট্ট অর্পিতা আজ অনেক বড় হয়ে গেছে। খুব ভদ্র ও শান্ত প্রকৃতির একটা মেয়ে। পারিবারিক শিক্ষা থেকে এগুলো শিখেছে। তার মা, বাবা ও বড় বোন ওকে নিয়ে অনেক কষ্ট করেছে। তার ফল স্বরূপ আজ অর্পিতার এই প্রাপ্তি। আমি অনেক খুশি ও গর্বিত অর্পিতাকে নিয়ে। আমি যখন ওর ফলাফল জেনেছি, কি যে আনন্দ পেয়েছি বলে বুঝাতে পারবো না। আমার স্কুলের প্রতিটি অভিভাবক ও ছাত্রীরা খুবই আনন্দিত অর্পিতার সাফল্যে। আশীর্বাদ করি অর্পিতা যেনো সাফল্যের চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছাতে পারে।
সিলেটের জমিন/বুধবার ● ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

এ জাতীয় আরো খবর

